Categories
Abaya Abaya story

Why abaya was black?

আবায়া কালোই কেন ছিল?

আবায়া নিয়ে পড়তে যেয়ে একটা মজার বিষয় পেলাম। আবায়ার প্রচলন শুরু হবার পরে আরব নারীরা কালো বোরখাই কেন পরতেন?

তাদের হাতের কাছে থাকা সহজ লভ্য জিনিস দিয়ে তারা আবায়া বানাতেন আর তখন খুব সহজ লভ্য ছিল ছাগল বা বকরীর চামরা! আর তা দিয়েই তারা আবায়া বানাতেন!

চিন্তা করলেও অবাক লাগে মরুভূমির বুকে তপ্ত গরমের মাঝে নিজেদের আবৃত রাখতে তারা ছাগলের চামড়ার মতো মোটা কিছু গায় জরাতে দিধা করেনি!

আরেক যায়গায় আছে যে এক লোকের প্রথম আবায়ার দোকান ছিল বাজারে আর সে সব কালো আবায়া রাখতেন সেখান থেকেই এই প্রচলন!

তবে গরমের সাথে কালো রং টার খুব রেশারেশির কারনে এখন কালোর যায়গায় অনেক ধরনের আবায়া আস্তে আস্তে সবার মাঝ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তবে কালোর আবেদন কখনোই কমে যায়নি৷

Categories
Abaya story

Manners of Abayas

আবায়ার আদবকেতা ১
(রং নির্বাচন)

আমরা যারা বোরখা পরি আমাদের এই পোশাকেই আমাদের সব যায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়। হোক তা পার্টি, অফিস, স্কুল, কলেজ অথবা সমুদ্রের পাড়।

আমরা যেহেতু এটা দিয়েই পর্দা করি আবার এটাই নিজেকে প্রেজেন্ট করি তাই সব কিছু মাথায় রেখেই কিন্তু একটা বোরখা বা আবায়া নির্বাচন করতে হয়। সেটা আমি ফিল করি।

পোশাকের খেত্রে অনেকের অনেক রকম পছন্দ থাকে তবে আবায়া অথবা বোরখা ইকটু ঢিলেঢালা করে বানালে দেখতেও ভালো লাগে আবার পর্দায় ও হেরফের হয়না। তাই আমার গুলো কয়েক ইঞ্চি ঢিলেঢালা থাকে। তাতে পরেও আরাম পাওয়া যায়।

অফিসের আবায়া নির্বাচন এর খেত্রে হাল্কা রং অথবা এমন কিছু গাড় রং নির্বাচন করা উচিত যা চোখের আরাম দিবে আবার দৃষ্টি কটু হবে না৷ যেমন বাদামী, হাল্কা সবুজ, আকাশী, ক্রিম, হাল্কা নীল, গাড় রং এর খেত্রে সব সময় কালো, ডিপ নেভি ব্লু , কফি এসব হতে পারে৷

আবার পার্টি আবায়া নির্বাচন এর খেত্রে যে কোন রং এর হতে পারে। তবে কাপড় টা যেন অতিরিক্ত চকচকে না হয়। তাতে কেমন যেন আবায়ার সাথে বেমানান একটা রং হয়ে যায়। আমি বেশিরভাগ পার্টি আবায়া হাল্কা রং এর। মাঝে মাঝে হালকা রং গুলো তেও আভিযাত্য প্রকাশ করা যায়।

স্কুল কলেজ এর স্টুডেন্ট দের জন্য সব রং এর সব ধরনের আবায়াই সুন্দর হবে। কেননা এই বয়স টাই রংগীন। নানা ধরনের নানা রং্যের প্রজাতির মত চারদিকে ঘুরে বেড়াবে বাধাহীন। যদিও আমি স্কুলে ব্লাকই বেশি পরতাম, একদিন আব্বু হজ্জ থেকে একটা কালাফুল আবায়া নিয়ে আসছিলেন সেটা পরায় সবাই খুব হাশা হাশি করেছিল 😁😁

তাই এখন আমার কলেজ পড়ুয়া ভাগ্নীকে আমি সব ধরনের আবায়া হিজাব কিনে দেয়ার চেস্টা করি৷ সব রং পরে এখন থেকেই বুঝুক কোনটা তার পছন্দ। তবে রেগুলার ব্যবহার এর জন্য কালোটাই ভালো। কারন তারা খুব দ্রুতই পোশাক ময়লা করে ফেলেন 😁।

বয়স ভেদে আবায়ার রং নির্বাচন। বয়সের খেত্রে রংটা গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাদের সব রং ভালো লাগবে, মানে আমার চেয়ে ছোট যারা 😂, সবাইকে আমার পিচ্চি লাগে। আর বড়দের মানে আমাদের নিয়ন রং গুলো ছাড়া সব ধরনের রং মানিয়ে যাবে আশা করি। আবার আমাদের মায়েদের জন্য ব্লাক, কফি, ব্রাউন, ডিপ পিচ এগুলো ভালো মানানসই হবে।

আবার আমরাই যখন রেগুলার বাইরে হাটতে যাওয়ার জন্য অথবা বাচ্চাদের স্কুল থেকে আনা নেয়া করার জন্য ইকটু গাড় রংকেই প্রাধান্য দিব। এক পার্ট এর এক কালার অথবা তা হতে পারে প্রিন্টেড কাপড় এর।

Categories
Abaya story

The Evolution of Abaya

#আবায়ার_বিবর্তন ৩

আবর বিশ্বের ফ্যাশন বিশারদ, রিম ইল মুতাওয়ালি, যিনি পি এইচ ডি করেছেন আরব সাহিত্য সংস্কৃতির ইতিহাস নিয়ে, তিনি তার লেখা অনেক গুলো বইতে আবায়ার বিবর্তন কে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে বিভিন্ন যুগে বিবর্তন এর ইতিহাস অনেক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন।

তেল আবিষ্কার হবার আগে আবায়া ঃ

তেল আবিষ্কার এর পুর্বে আবায়া ছিল খুবই ব্যায়বহুল ও উচ্চবিত্তদের আভিজাত্যের অংশ। তাদের আবায়া ছিল কাফতান এর মতো চারকোনা একটি আকৃতির কাপড় যার গলার দিকে সোনালী রং এর অসাধারণ কারুকার্য থাকতো৷ এই আবায়া শুরু মাত্র ব্যবসায়ী ও শেখ দের স্ত্রীরাই পরতেন।

সাধারণ মেয়েরা বিশাল কালো রং এর হিজাব বা ওড়না জড়িয়ে নিতেন শরীরের অর্ধেক টুকু ঢেকে রেখে তাকেই আবায়া হিসেবে ব্যবহার করতেন।

১৯৭০ দশকের আবায়া ঃ

এই সময়ে আবায়া জনপ্রিয়তা পেল বিভিন্ন সিল্ক এর মাধ্যমে যা অনেক টা ভারি ছিল আগের আবায়া গুলোর মতো সচ্ছ না। বিভিন্ন ধরনের আচার অনুষ্ঠান এ আবায়া পরে যাবার প্রচলন শুরু হলো। তখন আবায়া হতো মাথার উপরে থেকে কোমড় এর নিচ পর্যন্ত। কুচি দিয়ে কোমড়ে ও হাতার মাঝে একটা সামনজস্য রাখা হতো৷ আর আবায়া ছোট হবার ফলে আবায়ার নিচে পরা কাপড় দেখানো হতো।

১৯৮০ দশকের আবায়া ঃ

এখন আমরা আবায়া বলতে যা বুঝি এই সময়ে তা আসলে প্রথম প্রকাশ পায়। কাধ থেকে পা পর্যন্ত একদম সারা শরীর আবৃত রাখার মতো ডিজাইন তখন সৌদি আরবে প্রচলিত হয় আর সাথে আবায়ার সাথে মিলিয়ে চিকন একটা হিজাব মাথা ঢাকার জন্য৷ তখন কালো রং এর সব ধরনের কাপড় এর আবায়ার প্রচলন ও ডিজাইন দেখা যায়৷ সচ্ছ ভারি সব ধরনের কাপড়ের মাঝে নানা ধরনের ডিজাইন এর বাহারি আবায়া।

১৯৯০ দশকের আবায়া ঃ

আবায়ার পুর্ববর্তী ডিজাইন চলমান থাকে এই সময়েও আর সাথে সাথে নানা ধরনের এমব্রয়ডারি ও জমকালো লেস এর ব্যবহার শুরু হয়। আবায়াতে জাকজমক ভাব নিয়ে আসা হয় নানা ধরনের ডিজাইন এর মাধ্যমে। আবায়ার সাথে হিজাব কে এক সেট আকারে তুলে ধরনের হয় ওমানের লোকদের পরা টিউনিখ এর মতো। ইসলামি পোশাক হিসেবে আবায়া সবার কাছে গ্রহনযোগ্যতা পায় কেননা এক কাপড়ে সুন্দর ভাবে নিজেকে আবৃত রাখা যায়।

২০০০-২০১০ দশকের আবায়া ঃ

আবায়ার কাট ও ডিজাইন নিয়ে অহেতুক পরীক্ষা চলানো শেখ হয় ফলাফল আবায়া পায় কিছু কিম্ভূতকিমাকার ডিজাইন। প্রজাপতি, ব্যাট অথবা যে কোন পাখা ওয়ালা আকৃতি যার অনেক গুলো পার্ট থাকবে এমন ডিজাইন সব দিকে ছড়িয়ে পরে। কোমড়ের দিকে মোটা অথবা চিকন বেল্ট হিসেবে ডিজাইন যোগ হয় আবার কিছু কিছু আবায়ার সাথে হুডি জুড়ে দেয়া হয় প্রাচ্যের ডিজাইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে।


২০১০ – বর্তমান কালের আবায়া ঃ

বিভিন্ন রং ও ধরনের আবায়া ও হিজাব নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট শুরু হয় এই যুগে। ব্যক্তিত্ব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে, সচেতনতা মুলক পোশাকে সাথে সাথে আভিজাত্যপূর্ণ ডিজাইন আবায়ার মাঝে প্রকাশ পাওয়া শুরু করে। আরব দেশের ডিজাইনার গন অনুপ্রেরণা খুজে পান নিজেদের ডিজান গুলো বহির্বিশ্বের ডিজাইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বানাতে।


বিবর্তন এর মাধ্যমের পুর্বের সব ধারনা ও ধরন ভেংগে দিয়ে আবায়া এখন নিজের আলাদা একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে পুরো বিশ্বে। আবায়া এখন শুধু মাত্র নিজেকে আবৃত করার জন্য একটি পোশাক না। নিজেকে ও নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটা মাধ্যমের পরিনত হয়েছে। আবায়া পরিধান কারী মেয়ে ও নারীরা এখন নিজের কর্মস্থলে অথবা যে কোন আচার অনুষ্ঠানে নিজেকে আলাদা ভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম এই আবায়ার মাধ্যমে।

Categories
Abaya story

The Evolution of Abaya

#আবায়ার_বিবর্তন ২

অনেকেই বাধ্য হয়ে নয়
ভালোবেসেই আবায়া পরে থাকেন

একদিকে ২০১৮ সালে সৌদি আরবে ঘরের বাইরে আবায়া পরার বাধ্যতামূলক আইন তুলে নিয়ে নারীদের পোশাকের স্বাধীনতা দেয়া হচ্ছে অপরদিকে আইন তুলে নেবার পরেও একদল নারী নিজেদের আবায়ার প্রতি ভালোবাসা থেকেই আবায়াকে সাথে রাখতে চাচ্ছেন।

সৌদিতে জন্ম গ্রহণ করা নুর আল তামিমি, যার নিজের উদ্দোগ নাম The Nou Project যেটা দুবাইয়ের খুব জনপ্রিয়, মনে করেন ” আবায়া আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশ, ইন্ডিয়াতে যেভাবে শাড়ি পরা হয় আমরা সেভাবে আবায়া পরি। ” তাই তিনি দুবাইতে আবায়া না পরলেও সৌদিতে সব সময় আবায়া পরেই চলাচল করেন সাচ্ছন্দ্য নিয়ে।

আবায়া এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্য এর অংশ অনেকের কাছে। সৌদির ফ্যাশন ডিজাইনার আরওয়া আল বানাউই এর মতে, ” জাপানের কিমোনো যেমন তাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ, আবায়া আমার কাছে ঠিক তেমন “

“আবায়াকে নতুন রুপে আধুনিক যুগে উপস্থাপন করা একটা চ্যালেঞ্জ সব সময় তাই আমি যখন আবায়া ডিজাইন করি এর প্রধান বৈশিষ্ট্য থাকে সহজে পরার মতো যে কোন যায়গায় উপস্থাপন করার মতো ও আধুনিক সব কিছুর সাথে মানানসই, ” বলন আরওয়া।

যখন দুইজন ডিজাইনার তাদের আবায়ার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে এই কথা গুলো বলছিলেন সাথে সৌদি আইনের প্রতি সন্মান রেখেই তারা জানালেন এটাই হওয়া উচিত। কাউকে যোর করে কিছু চাপিয়ে দেয়ার চেয়ে তাদের নিজেদের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দেয়া উচিত।

সব চেয়ে মজার ব্যাপার তাদের মতে মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোর চেয়ে ওয়েস্টার্ন দেশ গুলোতে ডিজাইনার আবায়ার চাহিদা অনেক। অনেকেই নিজেদের এই সব পোশাকে সাজাতে পছন্দ করেন কেননা এই সব পোশাক এর মুল হচ্ছে নিজেকে সম্পুর্ন ভাবে আবৃত রাখা।

আবায়ার এই জনপ্রিয়তার অনেক গুলো কারন অনুসন্ধান করার সাথে সাথে তারা মনে করেন আবায়া কখনো বিলুপ্ত হবেনা এই আইনের ফলে কেননা এই আধুনিক যুগে মুসলিম নারীরা নিজেদের ব্যাক্তিত্ব প্রকাশের স্বাধীনতা পাচ্ছেন আর আবায়া এখন আর একটি পোশাকে সীমাবদ্ধ নেই প্রতিনিয়ত তা নতুন রুপে নানা সৃজনশীলতার মাধ্যমে হয়ে উঠছে আভিজাত্যের প্রতীক।

ধন্যবাদ সবাইকে। আবায়ার বিবর্তন এর তৃতীয় ও শেষ ভাগ আগামীকাল লেখা হবে ইনশাআল্লাহ।

Categories
Abaya story

The Evolution of Abaya

#আবায়ার_বিবর্তন ১

আবায়া শুধু একটা পোশাক নয়
এটি একটি সংস্কৃতির অংশ

আবায়ার ইতিহাস যেমন পুরনো তেমনি এর ধরনের ও রয়েছে অনেক বিবর্তন ও পরিবর্তন। কি অনেকে দেশের জন্য আবায়া একটি জাতীয় পোশাক ও সংস্কৃতির অংশ।

বিশ্বের ৯০ শতাংশ মুসলিম দেশের অধিকাংশ মহিলারা আবায়া পরিধান করেন না। তাই ২০১৮ সালে সৌদি আরবে মহিলাদের আবায়া পরায় বাধ্য করা যাবেনা বলে আইন পাশ হয়। কেননা এটা তাদের জাতীয় পোশাক এবং ঘরের বাইরে বের হলেই তাদের আবায়া পরিধান করা বাধ্যতামূলক ছিল।

ফ্যাশন সচেতনতায় এখন আবায়া নতুন রুপে আবির্ভাব হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ইসলামিক ফ্যাশন ও কাউন্সিল এর প্রধান আলিয়া খান মনে করেন আবায়াকে একটি ধর্মীয় পোশাকের চেয়েও তাদের কাছে সংস্কৃতির অংশ৷

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে মডেস্ট ফ্যাশন বা আবৃত পোশার এর জন্য খুব জনপ্রিয় এই আবায়া। তবে এখন অনেকেই আবায়ার পাশা পাশি লম্বা সার্ট, কোট, সামনে লং কাট দেয়া কিমোনো , পালেজ্জো এগুলোর সংমিশ্রণ এর মাধ্যমের মডেস্ট পোশাক বেছে নেন ও পরিবর্তন আনেন নিজেদের পোশাকে৷

সৌদি আবায়া ডিজাইনার হাসেম আকিল মনে করেন আবায়া শুধু এখন ধর্মীয় পোশাকে সীমাবদ্ধ নেই সেখানে এখন যায়গা পেয়েছে নানা ধরনের মিশ্রন, এমব্রয়ডারি কাজ, কারচুপির, মুক্তা খচিত কাজ এর মাধ্যমে আবায়াকে আরো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছ। এমনকি সব ধরনের ফ্যাশন ডিজাইনাররা এদিকে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

আবায়া ও মডেস্ট পোশাক এর জনপ্রিয়তার জন্য বিশ্বের সব ব্রান্ড যেমন – ডলসে, গাবানা, কেরোলিনা হেরারা এখন শুধু মাত্র মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোর জন্য আলাদা ভাবে আবায়া ডিজাইন করছেন প্রতিনিয়ত।

আকিল আরো মনে করেন যে সৌদি আরব ও অন্যান্য মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোতে এখন আবায়ার প্রতি ভালোবাসার জন্য এখন সব ধরনের শৌখিনতার জন্য আবায়াকে বেছে নেয়া হচ্ছে। যেহেতু দেশ গুলোতে সবার আর্থিক সংগতি রয়েছে তাই সব ফ্যাশন হাইজ গুলো সব চেয়ে দামী আবায়া গুলো প্রতিনিয়ত বাজারে আনছেন।

** ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

হিজাব নিয়ে ভাবনা

হিজাব নিয়ে ভাবনা!

আমি ক্লাস এইট থেকে অফিশিয়ালি আবায়া শুরু করি তার আগে আমি একদম ছোট্ট বেলা থেকে মানে একদম পিচ্ছি বেলা থেকেই মাথায় একটা হিজাব পড়তাম।

বাচ্চারা মাদ্রাসায় পড়তে যেতে যেভাবে পরে সেভাবে। আর কোন মতেই সেই হিজাব মাথা থেকে ফেলতাম না! না মানেই না। এটা আমার নিজের একটা অংশ মনে হত। এত খেলা করতাম দৌড় ঝাপ করতাম মাঠে মাঠে থাকতাম তাও এই হিজাব অর স্কার্ফ এর নরচর হত না!

আব্বু ইমাম হওয়ার ফলে বাসায় ধর্মীয় একটা আবহ সব সময় দেখার ফলে আমার কখনো মনে হয়নি এটা আমার উপর চাপিয়ে দেয়া! বরং আমি অপেক্ষা করতাম কবে বড় হয়ে আপুদের মত বোরখা পরব 😁

ক্লাস সিক্স এ ওঠার পরে আমি ক্রস বেল্ট এর সাথে ইয়া বড় এক ওড়না ঝুলিয়ে স্কুলে যেতাম আর বড় আপুরা মানে ৮/৯/১০ এর আপুরা আমাকে ক্লাস এ ডেকে নিয়ে খুব হাশা হাশি করত আবার অনেকের কাছে কিউট লাগত তাই ডেকে নাম ধাম জিজ্ঞেস করত আর আমিও খুব ভাব নিয়ে তাদের সাথে কথা বলতাম। আমার নিজের দুই আপুও সেই একি স্কুলে পড়ত কিন্তু ওরা আমাকে পাত্তাই দিতনা অই সময় আমি দুর থেকে ওদের আড্ডা দেখতাম টিফিন টাইমে আর ভাবতাম বড় হলে আমিও তোমাদের সাথে ভাব নিব হুহ 😑😑।
নেয়া হয়নি আসলে কারন আমি বড় হয়ে এখন ওদের সাথেই আড্ডা দেই 😁 😁

১০ এ উঠে নিকাব শুরু করলাম আর আস্তে আস্তে নিকাবি হয়ে গেলাম তার পর অনার্স এর সময় বা তার আগেই আপুরা সব নিজেরা কাপড় কিনে বোরকা বা আবায়া বানিয়ে দিত।

ঈদের সময় বান্ধবীর বাসায় বোরকা পরে যেতাম আর তারা আমাকে বলত “এত সুন্দর ড্রেস পরে কি লাভ বলত তুইতো বোরখা পরেই থাকিশ! ” অনেক প্রস্তাব দিত বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সময় খুলে যাবি কিন্তু আমি এদিক দিয়ে একদম সায় দিতাম না। কারন এটাই আমার আসল পরিধান মনে হত এখনো তাই হয়।

এর পরে অনার্স লাইফের আগেই নিজেরাই নিজেদের আবায়া ডিজাইন করে বানানো শুরু করলাম তাতে অনেকের অনেক কথা শুনেছি আর এখন সেই মানুষ জন আমাকে তাদের জন্য কিছু কিনে বা বানিয়ে দিতে বলে অথবা ফেসবুক এ ছবি দেখেই আমাকে ফোন দিয়ে বলে এটা বানিয়ে দিতে 😁😁

অনার্স লাইফে এত এত বোরখা পরেছি আর এখনো পরি সবাই একটা কথাই বলে তুমি এত এত বানাও না কিন! আমি বানাই নিজেই বানাই অন্যকে শখ করে বানিয়ে দেই গিফট দেই অনেক আগে থেকেই। এখনো দুইজন কাজিন এর আবদার আছে মিস্টি কালার এর আবায়ার জন্য। যা লাস্ট মিটাপে পরেছিলাম।

অনার্স এর ভাইভা তে একজন সহপাঠী বলেছিল তুই এক কাজ কর ভাইভার দিন এভাবে আসিস না। ইংরেজিতে অনার্স করা মেয়েদের এমন পোশাক মানায় না। কিন্তু আমি এই পোশাকেই ভাইভা দিয়ে সেকেন্ড ক্লাস পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ 😍😍

এত এত ইতিহাস লেখার একটাই কারন আজকে ভাইয়া আমাকে বলেছিলেন কাকলী Kakoly Russell Talokder আপুর সব পোস্ট পড়তে। আর আপুর পোস্ট পড়তে পড়তে আমার মনে হল আপু যেভাবে তার জামদানী নিয়ে ক্রেজি আমিও এই হিজাব আর বোরকা নিয়ে কম কাঠ খর পোরাইনি।।এমন পাগলামির অনেক অনেক গল্প আছে এই হিজাব নিয়ে। পরে সময় করে লিখব ইনশাআল্লাহ।

Razib Ahmed ভাইয়া এত এত পোস্ট পরে এগুলো সব মনে পড়ে গেল কিন্তু লিখতে পারছিলাম না মেয়ের জন্য। কয়েকদিন ধরে কিছু লিখতে পারছিনা হাতেই আসছেনা কিছু। তবুও হাল ছাড়ব না। ব্যবসা না করি কিন্তু নিজের গল্প তো সবাইকে বলাই যায় নাকি 😁😁

** আমার ভাবনার সাথে কেউ কেউ এক মত নাও হতে পারেন। তাই প্লিজ কস্ট পাবেন না। আমি সবার নিজস্ব মতামত কে স্রদ্ধা করি। সবাই দোয়া করবেন এভাবেই যেন বাকি জীবন হিজাব নিয়েই পার করতে পারি ইনশাআল্লা।